ছবি-সংগৃহীত
ডলার সংকটে চাপের মুখে বাংলাদেশের অর্থনীতি। ধারাবাহিকভাবে ডলারের দাম বাড়ায় উৎপাদন খরচ বেড়েছে। ফলে বিনিয়োগ ও ব্যবসা-বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। সৃষ্টি হয়েছে উচ্চ মূল্যস্ফীতি। নিত্যপণ্যের বাড়তি ব্যয় মেটাতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে মূল্যস্ফীতির চাপ কমাতে ডলারের দাম না বাড়িয়ে কমানোর পক্ষে মত দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে বাণিজ্যিক ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) নিয়মিত বৈঠকে এমন বার্তা দিয়েছে ব্যাংক খাতের এ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা।
গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়। এ সময় বাফেদা’র চেয়ারম্যান ও সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. আফজাল করিম, এবিবি’র চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দেশে ডলার সংকট চলছে। এর সঙ্গে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে মূল্যস্ফীতি। এটি নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। তাই যে কোনো উপায়ে মূল্যস্ফীতির চাপ কমানোর তাগিদ দেওয়া হয়েছে। এজন্য প্রয়োজনে ডলারের দাম (রেট) না বাড়িয়ে কমানোর ওপর জোর দেন বাংলাদেশ ব্যাংক-সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) দেশে মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যায়, খাদ্যের মূল্যস্ফীতি সাড়ে ১২ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। বিবিএস’র হিসাব বলছে, গত আগস্ট মাসে খাদ্যের মূল্যস্ফীতি ছিল ১২ দশমিক ৫৪ শতাংশ, যা গত ১১ বছর সাত মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।
এর আগে ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসে খাদ্যের মূল্যস্ফীতি উঠেছিল ১২ দশমিক ৭৩ শতাংশে। এক দশকের মধ্যে গত আগস্ট মাসে খাদ্যের মূল্যস্ফীতি প্রথমবারের মতো উঠেছে দুই অঙ্কের ঘরে।
একদিকে ডলারের সংকট, অন্যদিকে উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপ। এমন অবস্থায় ডলারের দাম বাড়ানো হবে, নাকি কমানো হবে— জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক বলেন, ‘বর্তমানে মূল্যস্ফীতির হার অনেক বেশি। এটি নিয়ন্ত্রণ করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। এমন অবস্থায় ডলারের দাম বাড়ানোর কোনো সম্ভাবনা নেই। কীভাবে দাম কমানো যায়, সেই চেষ্টা চলছে। এজন্য রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বাড়ানোর ওপর বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে। আগস্টে রেমিট্যান্স কম এসেছিল। তবে, এখন প্রবাহ বাড়ছে। রপ্তানি আয়ও বাড়ছে। অন্যদিকে, আমদানি ব্যয় কমছে। আশা করছি, ডলারের সংকট কেটে যাবে।
আরো পড়ুন: সিটি ব্যাংকের নতুন ডিএমডি সায়েফ উল্লাহ কাউসার
এসি/ আই. কে. জে/